অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দেশের পরিস্থিতি শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান।

- আপডেট সময়ঃ ১২:০০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
- / 52
দেশের জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ বুধবার তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান।
তারেক রহমান উল্লেখ করেন, ‘শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যদি সরকার পরিচালনায় দক্ষতা প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়, তবে জনগণ অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে পারে। পলাতক স্বৈরাচারের সহযোগীরা জনগণের অসহিষ্ণুতা বাড়ার অপেক্ষায় রয়েছে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অবৈধ ক্ষমতা ও সুবিধা হারানো পলাতক স্বৈরাচারের সহযোগীরা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে জনগণের দাবি আদায়ের আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে।’
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা বিনষ্টের উদ্দেশ্যে যারা কাজ করছে, তাদের কার্যকলাপ অত্যন্ত উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।
তারেক রহমান বলেন, ‘মাফিয়া সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে যারা সাহসী ভূমিকা পালন করেছে, তারা হঠাৎ করে কেন একে অপরের প্রতি এতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছে? জনমনে এই প্রশ্নটি এখন প্রাধান্য পাচ্ছে। সফল গণ-অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা কেন শিক্ষাঙ্গনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করবে? এসব ঘটনা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করার সুযোগ নেই।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পরিস্থিতির ওপর নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, জনগণের যৌক্তিক আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে কেউ কি না ‘স্যাবোটাজ’ করছে, তা নিবিড়ভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিতাড়িত স্বৈরাচার দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে কি না, সরকারকে এ বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করতে হবে।
এছাড়া, চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে একত্রিত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমান উল্লেখ করেন, ‘জনগণের দৈনন্দিন দুর্দশা লাঘবের জন্য “করণীয় নির্ধারণ” সরকারের প্রধান এবং প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মনে রাখতে হবে যে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতির কারণে দেশের কোটি কোটি পরিবার প্রতিদিন তাদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে আপস করতে বাধ্য হচ্ছে। পারিবারিক খরচ মেটানোর জন্য এমন কঠিন অবস্থায় অনেকের কাছে “সংস্কারের চেয়ে সংসার” অগ্রাধিকার হয়ে উঠা অস্বাভাবিক নয়।’
তিনি আরও বলেন, যদি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা না যায়, তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য এই স্পর্শকাতর ইস্যু ব্যবহার করার সুযোগ পেতে পারে।
জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যও তারেক সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সরকারকে জনগণের আস্থা অর্জন ও বজায় রাখার জন্য তিনি তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘সরকারের কোনো কার্যক্রম বা বক্তব্য যেন ছাত্র-জনতার ঐক্যে বিভেদ সৃষ্টি না করে, এ বিষয়ে সরকারের উচিত বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়া।’
তিনি সকলকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান যাতে জনগণের আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দেশের স্বার্থবিরোধী অপশক্তি এবং পলাতক স্বৈরাচার গণ-অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্যকে ভিন্ন দিকে পরিচালিত করতে না পারে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারকে কিছুটা সময় ও ধৈর্য প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্ত থাকুন। পরিস্থিতির প্রতি সতর্ক ও সজাগ দৃষ্টি রাখুন।’
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে ষড়যন্ত্রকারীদের বাধা বিচক্ষণতার সঙ্গে অতিক্রম করতে ব্যর্থ হলে জনগণকে ভীষণ মূল্য দিতে হতে পারে, এমন সতর্কবার্তা দেন তারেক রহমান।