১১:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

আসিফ মাহমুদ বলেছেন,আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন দল বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

  • আপডেট সময়ঃ ১১:১৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • / 56

আন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উল্লেখ করেছেন, যখন আমরা সরকারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কথা বলি, তখন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বক্তব্যে সেটি প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘নবীন চোখে গণ-অভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আসিফ মাহমুদ এই মন্তব্য করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এই সভার আয়োজন করে।

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ১৯৪৫ সালে জার্মানির ফ্যাসিস্ট নাৎসি পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হলে এবং তারা এখনও নিষিদ্ধ রয়েছে; সেখান থেকেই বোঝা উচিত আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে।

আসিফ মাহমুদ উল্লেখ করেন, এই গণ–অভ্যুত্থান আংশিকভাবে সফলতা অর্জন করেছে। কারণ, আমাদের এক দফা দাবির মধ্যে ছিল শেখ হাসিনার পতন এবং ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান। তবে, এখনও সেই ফ্যাসিবাদী শাসন সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা সম্ভব হয়নি।

গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে জানিয়ে আসিফ বলেন, শহীদ ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি এবং নিচ্ছি। পূর্বে বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার জন্য যে খরচ হয়েছে, তা সরকারের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তবে, কিছু জটিলতা রয়েছে, যেমন তাদের পাসপোর্টের অভাব এবং অনেকের অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়া। আহতদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে একটি।

আলোচনা সভায় সোশ্যাল অ্যাকটিভিস্ট সাইয়েদ আবদুল্লাহ উল্লেখ করেন, এই গণ–অভ্যুত্থানের পর অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, এখন প্রত্যেকেই নিজেদের নাগরিক হিসেবে অনুভব করছে। সংবিধান সংস্কার কমিটিতে আমি একটি বিষয় তুলে ধরেছি, বাংলাদেশের সরকারি নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাখা উচিত নয়। কারণ, যখন এই শব্দের মধ্যে ‘প্রজা’ থাকবে, তখন আমাদের মনে একটি ভীতি কাজ করে যে, হয়তো কেউ রাজা রয়েছে। আমি নতুন বাংলাদেশে কোনো রাজা দেখতে চাই না, বরং দেখতে চাই যে, এই দেশের প্রকৃত মালিক হলো জনগণ।

আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন, আমরা এমন একটি ব্যবস্থা চাই, যেখানে জবাবদিহি থাকবে। রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য থাকবেন। আমরা এমন একটি ব্যবস্থা চাই, যেখানে আমরা ন্যায়বিচার পাবো। আমাদের ধর্ম, জাতিগত পরিচয় এবং দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে।

সভায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ জামালউদ্দিন, অধ্যাপক মো. লুৎফুল এলাহী, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ। আলোচনা শেষে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় গান পরিবেশন করেন র‍্যাপার হান্নান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আসিফ মাহমুদ বলেছেন,আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন দল বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

আপডেট সময়ঃ ১১:১৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

আন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উল্লেখ করেছেন, যখন আমরা সরকারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কথা বলি, তখন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বক্তব্যে সেটি প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘নবীন চোখে গণ-অভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আসিফ মাহমুদ এই মন্তব্য করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এই সভার আয়োজন করে।

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ১৯৪৫ সালে জার্মানির ফ্যাসিস্ট নাৎসি পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হলে এবং তারা এখনও নিষিদ্ধ রয়েছে; সেখান থেকেই বোঝা উচিত আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে।

আসিফ মাহমুদ উল্লেখ করেন, এই গণ–অভ্যুত্থান আংশিকভাবে সফলতা অর্জন করেছে। কারণ, আমাদের এক দফা দাবির মধ্যে ছিল শেখ হাসিনার পতন এবং ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান। তবে, এখনও সেই ফ্যাসিবাদী শাসন সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা সম্ভব হয়নি।

গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে জানিয়ে আসিফ বলেন, শহীদ ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি এবং নিচ্ছি। পূর্বে বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার জন্য যে খরচ হয়েছে, তা সরকারের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তবে, কিছু জটিলতা রয়েছে, যেমন তাদের পাসপোর্টের অভাব এবং অনেকের অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়া। আহতদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে একটি।

আলোচনা সভায় সোশ্যাল অ্যাকটিভিস্ট সাইয়েদ আবদুল্লাহ উল্লেখ করেন, এই গণ–অভ্যুত্থানের পর অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, এখন প্রত্যেকেই নিজেদের নাগরিক হিসেবে অনুভব করছে। সংবিধান সংস্কার কমিটিতে আমি একটি বিষয় তুলে ধরেছি, বাংলাদেশের সরকারি নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাখা উচিত নয়। কারণ, যখন এই শব্দের মধ্যে ‘প্রজা’ থাকবে, তখন আমাদের মনে একটি ভীতি কাজ করে যে, হয়তো কেউ রাজা রয়েছে। আমি নতুন বাংলাদেশে কোনো রাজা দেখতে চাই না, বরং দেখতে চাই যে, এই দেশের প্রকৃত মালিক হলো জনগণ।

আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন, আমরা এমন একটি ব্যবস্থা চাই, যেখানে জবাবদিহি থাকবে। রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য থাকবেন। আমরা এমন একটি ব্যবস্থা চাই, যেখানে আমরা ন্যায়বিচার পাবো। আমাদের ধর্ম, জাতিগত পরিচয় এবং দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে।

সভায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ জামালউদ্দিন, অধ্যাপক মো. লুৎফুল এলাহী, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ। আলোচনা শেষে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় গান পরিবেশন করেন র‍্যাপার হান্নান।