১০:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার নামে হত্যাচেষ্টা মামলার বাদী যুবলীগ কর্মী।

  • আপডেট সময়ঃ ১১:৩৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
  • / 50

কফিল উদ্দিন (২৭) যুবলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক উপ–অর্থবিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের মিছিল ও সমাবেশে তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

নিজের হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল ছবিতে বাবরের সঙ্গে একটি ছবি রয়েছে। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও মামলার আসামি হিসেবে তার নাম এসেছে। থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদকসহ আরও তিনটি মামলা রয়েছে।

এখন কফিল উদ্দিন চট্টগ্রামের আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ ১৮৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রীসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীদের আসামি করায় ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

গত সোমবার (১৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার একটি মামলায় কফিল নিজেও আসামি। ১০ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় মো. রাইয়ান নামে এক যুবক ২৭৮ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। সেখানে কফিলকে ২৩ নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল।

মামলার অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন– সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব, মজিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম, সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ, ওয়াসিম উদ্দিন, মোবারক আলী প্রমুখ।

এছাড়া পিবিআইয়ের প্রাক্তন প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার, প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম, কোতোয়ালি থানার প্রাক্তন ওসি ওবায়দুল হক, নেজাম উদ্দিন, মোহাম্মদ মহসীন, জাহিদুল কবির, এসআই বোরহান উদ্দিন, খাজা এনাম এলাহীসহ মোট ২৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী বাদীর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কফিল উদ্দিন গত ৪ আগস্ট নগরীর নিউমার্কেট গোলচত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ওই দিন আসামিদের মধ্যে কয়েকজনের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা গুলি চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এই ঘটনায় কফিলের হাতে আঘাত লাগে এবং পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ঘটনার সাথে জড়িত আসামিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করতে এবং সুস্থ হতে সময় লাগায় মামলা করতে বিলম্ব ঘটে।

কফিল উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ করেছি। ছাত্র ও জনতা দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আমি নিজেও এই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। আমি কোনো ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য মামলা দিইনি; এটি আমার বিবেকের তাড়না থেকে এসেছে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি, কারণ আমি রাজনীতিতে বৈষম্যের শিকার। আমার কোনো পদ বা পদবি ছিল না।’

তথ্য অনুযায়ী, কফিল উদ্দিন নগরীর নন্দনকানন এলাকায় একটি থাই অ্যালুমিনিয়ামের দোকানে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি থানায় অস্ত্র ও মাদকসহ তিনটি মামলা এবং আনোয়ারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে। তিনি গ্রেপ্তার হয়ে একাধিকবার কারাগারে গেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার নামে হত্যাচেষ্টা মামলার বাদী যুবলীগ কর্মী।

আপডেট সময়ঃ ১১:৩৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

কফিল উদ্দিন (২৭) যুবলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক উপ–অর্থবিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের মিছিল ও সমাবেশে তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

নিজের হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল ছবিতে বাবরের সঙ্গে একটি ছবি রয়েছে। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও মামলার আসামি হিসেবে তার নাম এসেছে। থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদকসহ আরও তিনটি মামলা রয়েছে।

এখন কফিল উদ্দিন চট্টগ্রামের আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ ১৮৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রীসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীদের আসামি করায় ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

গত সোমবার (১৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার একটি মামলায় কফিল নিজেও আসামি। ১০ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় মো. রাইয়ান নামে এক যুবক ২৭৮ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। সেখানে কফিলকে ২৩ নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল।

মামলার অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন– সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব, মজিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম, সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ, ওয়াসিম উদ্দিন, মোবারক আলী প্রমুখ।

এছাড়া পিবিআইয়ের প্রাক্তন প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার, প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম, কোতোয়ালি থানার প্রাক্তন ওসি ওবায়দুল হক, নেজাম উদ্দিন, মোহাম্মদ মহসীন, জাহিদুল কবির, এসআই বোরহান উদ্দিন, খাজা এনাম এলাহীসহ মোট ২৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী বাদীর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কফিল উদ্দিন গত ৪ আগস্ট নগরীর নিউমার্কেট গোলচত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ওই দিন আসামিদের মধ্যে কয়েকজনের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা গুলি চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এই ঘটনায় কফিলের হাতে আঘাত লাগে এবং পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ঘটনার সাথে জড়িত আসামিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করতে এবং সুস্থ হতে সময় লাগায় মামলা করতে বিলম্ব ঘটে।

কফিল উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ করেছি। ছাত্র ও জনতা দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আমি নিজেও এই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। আমি কোনো ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য মামলা দিইনি; এটি আমার বিবেকের তাড়না থেকে এসেছে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি, কারণ আমি রাজনীতিতে বৈষম্যের শিকার। আমার কোনো পদ বা পদবি ছিল না।’

তথ্য অনুযায়ী, কফিল উদ্দিন নগরীর নন্দনকানন এলাকায় একটি থাই অ্যালুমিনিয়ামের দোকানে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি থানায় অস্ত্র ও মাদকসহ তিনটি মামলা এবং আনোয়ারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে। তিনি গ্রেপ্তার হয়ে একাধিকবার কারাগারে গেছেন।