বর্তমান সরকারের কাছে বিচার প্রার্থনা করেছেন ছাত্রলীগের প্রাক্তন সেক্রেটারি গোলাম রাব্বানী।

- আপডেট সময়ঃ ১২:১৭:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
- / 75
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তিনি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির অভিযোগের সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি ফারজানা ইসলামকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে একটি পোস্ট করেন গোলাম রাব্বানী। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। গোলাম রাব্বানী উল্লেখ করেন, ‘রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে, দলমত নির্বিশেষে যেকোনো ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানানো এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো আমার কর্তব্য ছিল। আমি দলের সুনাম ও জনসমর্থন বৃদ্ধির জন্য সর্বদা চেষ্টা করেছি।’
নিজ দলের কাছ থেকে ন্যায়বিচার না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে দলের জন্য এবং লালিত আদর্শের জন্য আমি আমার জীবনের মূল্যবান সময় ব্যয় করেছি, কতগুলো ঝুঁকি নিয়েছি, সেই দলের পক্ষ থেকে চরম অন্যায় আচরণের শিকার হওয়া এবং বারবার আত্মচিৎকার করেও প্রাপ্য ন্যায়বিচার না পাওয়ার হতাশা ও কষ্টের মাত্রা কতটা তীব্র, তা কেবল অন্যায় ভুক্তভোগীই উপলব্ধি করতে পারে!’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ফারজানাকে নিয়ে রাব্বানী লেখেন, ‘নিজের ও পরিবারের দুর্নীতি-অনিয়ম আড়াল করতে, প্রমাণিত মহাদুর্নীতিবাজ সাবেক ভিসি ফারজানা ম্যাডামের তথ্যপ্রমাণবিহীন, মনগড়া মৌখিক অভিযোগ এবং কিছু স্বার্থান্ধের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পরিকল্পিত মিডিয়া ট্রায়ালে, আনীত অভিযোগের বিরুদ্ধে ‘আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যূনতম সুযোগ’ না পেয়ে, নির্ধারিত সময়ের আগেই দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।
যে পদত্যাগপত্রে আপার নাম ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে!
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই। তাই আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিজেদের দায়মুক্তি এবং দুর্নীতিবাজ ফারজানাকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। যার বিরুদ্ধে ৬৬ কোটি টাকার অডিট আপত্তি, উন্নয়নকাজে ২৯ কোটি টাকার কমিশন গ্রহণসহ অসংখ্য অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ছাত্র-শিক্ষক সকলের কাছে বিদ্যমান।’
গোলাম রাব্বানী তার পোস্টে সরকারকে কিছু চ্যালেঞ্জ করে লেখেন, ‘উদ্ভূত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বর্তমান দায়িত্বশীলদের নিরপেক্ষ যাচাইয়ের পূর্ণ সুযোগ রয়েছে, তাই আমি স্পষ্টভাবে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি’— * দল ক্ষমতায় থাকার দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রণালয় বা সরকারি-বেসরকারি কোনো দপ্তর থেকে ১ টাকার কোনো কাজের টেন্ডার হয়নি। সাবেক বা বর্তমান কোনো এমপি, মন্ত্রী, আমলা অথবা অন্য কেউ দাবি করতে পারবেন না যে গোলাম রাব্বানী তাদের থেকে কখনো কোনো কাজ বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
১. ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকার সময় কেন্দ্রীয় কমিটি বা অন্য কোনো সাংগঠনিক ইউনিটের সদস্যদের কাছ থেকে পদের বিনিময়ে এক কাপ চা পর্যন্ত গ্রহণ করিনি, ইনশাআল্লাহ। বিভিন্ন কমিটি ও পদের জন্য এমপি-মন্ত্রী, নেতা, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনেক লোভনীয় প্রস্তাব পেয়েও বিনয়ের সাথে তা প্রত্যাখ্যান করেছি।
আমার নিজস্ব কোনো সম্পদ, প্লট বা ফ্ল্যাট নেই। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অন্যদের অনুসরণ করে কখনো সরকারি প্লট বা ফ্ল্যাটের জন্য আবেদন করিনি।
উপার্জনের বিকল্প মাধ্যম না থাকায়, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে থেকেও বেসরকারি চাকরি করে (গত জুলাই থেকে বেতন বন্ধ) জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে এবং নিজের হালাল উপার্জনের অর্থে দলমত নির্বিশেষে অসহায় মানুষের জন্য কাজ করেছি। এমনকি অর্থাভাবে নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানও করতে পারিনি, যার ফলে আমাকে আমার দলের ‘দুর্নীতিবাজ’দের মিথ্যা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ‘দুর্নীতিবাজ’ তকমা নিতে হয়েছে, হায় সেলুকাস!
তিনি বলেন, ‘সঙ্গত কারণেই সংক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী হিসেবে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিকার তথা ন্যায়বিচার চাই।’