আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনতে সরকার সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সকল পলাতক আসামিকে বিচারের সম্মুখীন করতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড এলার্ট জারি করার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

রবিবার (১০ নভেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পুরাতন ভবনের সংস্কারকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ড. ইউনূসসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার এ অভিযোগকে কোনোভাবেই গুরুত্ব দিচ্ছে না।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ দায়ের করে আওয়ামী লীগ দেশের সম্মানকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে।

আসিফ নজরুল বলেন, এটি কোনো মামলা নয়, বরং আইসিসির প্রসিকিউশন অফিসে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। পৃথিবীর যে কোনো ব্যক্তি এটি করতে পারে। এটি একটি অবিশ্বাস্য এবং ভিত্তিহীন মামলা, যা রিট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী বিশ্ব জনমত এবং বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নিজেদের রক্ষার উদ্দেশ্যে মিথ্যা প্রচারণার অংশ হিসেবে এই মামলা করেছে।

এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আমরা এখনও দলের বিচারের বিষয়ে তদন্ত শুরু করিনি, যদিও আমাদের কাছে কিছু অভিযোগ এসেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমরা যে তদন্তগুলো পরিচালনা করছি, সেখানে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিরুদ্ধে আলাদাভাবে তদন্ত চলছে। তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ আমরা ধারাবাহিকভাবে সংগ্রহ করছি।

এছাড়া, রাজধানীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং অন্যান্য বেশ কিছু সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পেশার শীর্ষস্থানীয় অন্তত ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।